Saturday, October 3, 2015

♦♦ Study In Cyprus

সাইপ্রাস থেকে ইউসুফ সানী::--

দালালদের মিষ্টি মিষ্টি কথা আর
মিথ্যা প্রলোভন দেখে চোখ ভরা
স্বপ্ন আর বুক ভরা আশা নিয়ে
ফসলের জমি, মায়ের সোনা কিংবা
সুদে টাকা ঋণ নিয়ে অনেকেই পারি
জমাচ্ছেন ভূমধ্য সাগরের দ্বীপ
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভূক্ত দেশ
সাইপ্রাসে। আসার পর তাদের স্বপ্ন
ভেঙ্গে হয়ে যায় খান খান, স্বপ্নের
সেই রাষ্টটি হয়ে যায় তাদের জন্য
জাহান্নাম। বিগত ছয়মাস যাবত
বিভিন্ন ভাইয়েরা এ দেশ সম্পর্কে
জানতে চাচ্ছেন, বর্তমান অবস্থা
জানতে চাচ্ছেন, সবাইকে আসতে
মানা করার পরেও আসছেন, আর
দালাল কতৃক প্রতারিত হচ্ছেন।তাই
নিজের বিবেকের তাড়নায় এই
লেখা, তুলেধরার চেষ্টা করছি
বর্তমান অবস্থা, দালালদের
প্রতারণা, আর বাস্থবতা…..
প্রথমেই সাইপ্রাসে স্টুডেন্ট ভিসায়
আসতে কতটাকা ব্যয় হয় তার হিসাব
দিয়ে দেই। কলেজের টিউশন ফি
৩৭০০ হতে ৪০০০ ইউরো, বিমান
টিকেট ৫৫০ হতে ৬০০ ইউরো, মোট
৪৫০০ ইউরো বাংলাদেশী টকায়
৪৫০০*৮৫= ৩৮২৫০০ টাকা, আর দেশে
মিনিষ্টি এটাষ্ট এবং অন্যান্য খরছ
সর্বোচ্ছ ১৮০০০ টাকা সর্বোসাকুল্যে
৪ লক্ষ্ টাকা, সাইপ্রাস
ইমিগ্রেশনের নিয়মানুযায়ী ২৫০০
ইউরো সাথে আনতে হয়। কিন্তু
দালালরা নিচ্ছে কমপক্ষে সাড়ে ৫
লক্ষ টাকা, এখানেই শেষ নয়…….
এবার আসি দালালদের দেখানো
স্বপ্নের বাস্থবতায়, সাধারণত দুটি
বড় স্বপ্ন নিয়ে আমাদের দেশের
ছাত্ররা এখানে আসেন, ১)
লেখাপড়ার পাশাপাশি অবারিত
চাকুরির সুযোগ মাসে ৬০-৭০ হাজার
টাকা বেতন, ২) এটি ইউরোপের দেশ
বিধায় ৬ মাস পরে ইংলেণ্ড
আমেরিকা সহ সেনজেনের যেকোন
দেশে অনায়েসে যাওয়ার ব্যবস্থা।
প্রথমত হলো স্টুডেন্টদের ৬মাসের
আগে চাকুরির বৈধতা নেই,
সাইপ্রসের মোট জনসংখ্যার ৪০%
বেকার। দেশটি ২০১০ সালের পর
হতে অর্তনৈতিক মন্ধায় নিমজ্জিত
তারা তাদের দেশের লোকদের
চাকুরির ব্যবস্থা করতে পারছেনা
তার ওপর রোমানিয়ান ও
বোলগেরিয়ান, যদিও সিপ্রোটরা
আমাদের কাজের ক্ষেত্রে
অগ্রাধিকার দিতে চায় কিন্তু
ইমিগ্রেশন ঝামেলার কারণে দিতে
পারে না, যদি কেউ সাইপ্রাসে
কাজে ধরা পরে তবে তার
রেসিডেন্স পরমিট বাতিল করে
দেশে পাটিয়ে দেয়া হয়। সবচেয়ে
বড় যে স্বপ্ন তা হচ্ছে অন্য দেশে
চলে যাওয়া। যারা ৬ মাস পরেই
ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন করেন
তাদের শতকরা ৯৯.৯৯ ভাগই
রিফিউজ হন, একবার রিফিউজ মানে
পরবর্তীতে ভিসা পাওয়ার
সম্ভাবনা ৫%। আর তাই যারা এ
দুটি স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন তাদের
সাইপ্রাস জীবন এখন বিভীষিকাময়,
সাইপ্রাসের রেসিডেন্স পারমিট
থাকলে আপনি বিনা ভিসায় তিনটি
দেশ ভ্রমন করতে পারবেন
রোমানিয়া, বোলগেরিয়া,
ক্রোরেশিয়া। কিন্তু যারা যান
তারা আর সাইপ্রাসে আসেন না
বিধায় ঐ তিনটি দেশ তাদের
দেশে বিনা ভিসার এশিয়ানদের
প্রবেশ করতে দেয় না। অনেক
দালালরা বলে থাকে ২০১৬ সালে
সাইপ্রাস সেনজেন হবে। না, অন্তত
২০২০ সাল পর্যন্ত সেনজেন হওয়ার
বিন্দু মাত্র কোন সম্ভাবনা নেই। এই
হল এখানকার অবস্থা। এবার আসি
দালালদের প্রতারনায়
সাইপ্রাসে দালাল হলো
সিন্ডিকেট, ওফার লেটার তোলা
হতে স্টুডেন্ট পাঠানো পর্যন্ত সবই
একটি সিন্ডিকেটেরর মাধ্যমে হয়ে
থাকে। টিউশন ফি সম্পূর্ণ
পাঠানোর কথা থাকলেও দালালচক্র
পাঠায় আর্ধেক বা তার চাইতে
সামান্য বেশী, বাকি টাকা
স্টুডেন্ট সাইপ্রসে এসে পরিশোধ
করতে হয়, যে সকল দালাল বলে
সম্পূর্ণ টিউশন ফি পরিশোধ করবে
তারা বানোয়াট কথা বলে,
আপনাকে মাষ্ট ১০০০ হতে ১৫০০ ইউরো
দিতে হয়। যারা দালালের মাধ্যমে
এসেছেন সবাইকেই এই টাকা
পরিশোধ করতে হয়েছে, আবার
কারো কারো কোন টাকাই পরিশোধ
করেনি, আমরা বার বার নিষেধ
করা শর্তেও ভাইয়েরা তাদের
কাছে গিয়ে প্রতারিত হন।
তার পর আসা যাক সাইপ্রাসে,
আপনি যখন সাইপ্রাসে পৌছান তখন
আপনাকে রিসিভ করে এখানকার
স্থানীয় দালাল, সে জানে আপনি
২৫০০ ইউরো সাথে এনেছেন, সে
আপনার টাকা লোটার চিন্তায়
থাকে, আপনাকে রিসিভ করা বাবত
১০০ ইউরো, টেক্সি ভাড়া ৫০ ইউরো,
তার বাসায় নিয়ে রাখবে ৬০-৭০
ইউরো, বাসায় তুলে দিবে ২০০-৩০০
ইউরো, হাউজ এগ্রিমেন্টের জন্য ৫০
ইউরো, মোট ৫০০ হতে ৬০০ ইউরো
আপনার কাছ হতে হাতিয়ে নে, অতচ
এখানে সর্বোচ্ছ খরছ হচ্ছে ১২০
ইউরো। এখানে আপনাকে ব্যাংকে
একাউন্ট করতে হবে এবং নূন্যতম ২৫০০
ইউরো স্টেইটমেন্ট দেখাতে হয়।
আপনি যখন আপনার কলেজে যাবেন
দেখবেন আপনার ১০০০ হতে ১৫০০
ইউরো বকেয়া তখন আপনার পায়ের
তলায় আর মাটি অবশিষ্ট
থাকবেনা। ঐ অবস্থার মধ্যেও
কলেজে আপনাকে প্রতিবছর ২২০০
ইউরো দিতে হবে, শুধু মাত্র একটি
কলেজ আছে যেখানে আপনাকে ১০০০
ইউরো দিলেই চলে।
দালালদের মিষ্টি কথার কোন
বাস্থবতা পাওয়া যায়না, কাজের
কোন সন্ধান মিলেনা, দেশ হতে
ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য চাপ
আসে তখন স্বপ্নের পরিবর্তে দুটি
চোখে নেমে আসে অন্ধকার, না
কাউকে বলাযায় না নিজে সহ্য করা
যায়।

0 comments

Post a Comment